Saturday, February 11, 2012

স্ক্যাল্পিং

আপনি হয়তো অনেক জায়গায় স্ক্যাল্পিং শব্দটি শুনেছেন। মূলত ছোট ট্রেড গুলোই হল স্ক্যাল্পিং। কয়েক মিনিটের ছোট ট্রেড গুলোকে স্ক্যাল্পিং বলা হয়। এই ট্রেড গুলো হতে পারে ১-২০ পিপস। আভিধানিক ভাবে ২০ পিপসের ওপরে প্রফিট হলে তাকে স্ক্যাল্পিং বলা যাবে না। সেটা সাধারন ট্রেড হয়ে যায়।
মার্কেট সবসময়ই ওঠা-নামা করে। আপনি এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যে কিছু পিপস লুফে নিতে পারেন। কিন্তু স্ক্যাল্পিং কিন্তু ঝুকিপূর্ণ। অনেকেই দেখা যায় কিছু না বুঝে রিস্ক নিয়ে স্ক্যাল্পিং করে। কিন্তু স্ক্যাল্পিংয়েও অ্যানালাইসিস করা উচিত। কোন ট্রেডেই অ্যানালাইসিস ছাড়া প্রবেশ করা উচিত নয়। স্ক্যাল্পিং করার সময় ট্রেন্ডের দিকে ট্রেড দেয়াই ভাল। সেক্ষেত্রে ট্রেডে লাভ করার সম্ভবনাটা তুলনামুলক ভাবে বেশি থাকে।


স্ক্যাল্পিং যেহুতু কম সময়ে করা হয়, তাই আমাদের ট্রেড করা উচিত কম সময়ের টাইমফ্রেমে। স্ক্যাল্পিং এর অনেক রুলস আছে। আপনি স্ক্যাল্পিং ট্রেড করার সময় M1, M5, M15 টাইমফ্রেম অনুসরন করতে পারেন। কিন্তু আপনি যদি H4 টাইমফ্রেম অনুসরন করেন তাহলে কোন লাভ হবে না, কারন ২-১ মিনিটে মার্কেটে কি পরিবর্তন হল তা আপনি H4 চার্ট দেখে সহজে বুঝতে পারবেন না। মিনিটের টাইমফ্রেম গুলো স্ক্যাল্পিং এ বেশি সহায়ক।
অনেকেই স্ক্যাল্পিংয়ের জন্য অনেক ইন্ডিকেটর ফলো করে থাকেন। কিন্তু স্ক্যাল্পিংয়ে ইন্ডিকেটর খুব একটা কাজ করে না। কারন মার্কেটের ছোট ছোট মুভমেন্টগুলো তো আর কোন নিয়ম মেনে চলে না।
কিছু কিছু ব্রোকার আছে যারা স্ক্যাল্পিং সাপোর্ট করে না। আবার অনেক ব্রোকারের স্ক্যাল্পিং এ ২ মিনিট রুলস আছে। ২ মিনিটের আগে ট্রেড ক্লোজ করলে তা বাতিল করে দেয়ার অধিকার ব্রোকার রাখে। তাই আপনি যে ব্রোকারের সাথে ট্রেড করছেন, সেই ব্রোকারের স্ক্যাল্পিং সম্পর্কে কোন রুলস আছে কিনা আগে জেনে নিন।

ডিপোজিট এবং উইথড্র

আমরা বাংলাদেশীরা একটা ব্যাপার নিয়ে অনেক ভুক্তভোগী। আমাদের দেশে পেপাল নেই। তাই আমরা দেশে অনলাইন থেকে সহজে টাকা আনতে পারি না। বাংলাদেশ থেকে ব্যাংক ট্রান্সফার করে বাইরে টাকা পাঠানোর অনুমতি নেই। তাই বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশ অনুযায়ী আপনি দেশ থেকে টাকা ডিপোজিট করতে পারবেন না। কিভাবে ফরেক্সে ডিপোজিট করবেন? আপনি ecurrency এর মাধ্যমে ফরেক্সে ডিপোজিট করতে পারেন। পেপাল এর মত অনেক অনলাইন পেমেন্ট প্রসেসর রয়েছে। যেমনঃ Liberty Reserve (LR), AlertPay (AP), MoneyBookers (MB) ইত্যাদি। আপনি এসবের মাধ্যমে অনলাইনে ফরেক্সে ডিপোজিট করে ট্রেড করতে পারেন। এছাড়া ইন্টারন্যাশনাল মাস্টারকার্ড/ভিসা কার্ড দিয়েও ডিপোজিট করতে পারবেন।
আপনি আপনার ফ্রি-ল্যান্সিং বা অনলাইন থেকে আয় করা ডলার ফরেক্সে ডিপোজিট/ইনভেস্ট করতে পারেন।

ডিপোজিট করার জন্য কোনটি ভাল?


Liberty Reserve: ফরেক্সে ডিপোজিট করার জন্য লিবার্টি রিসার্ভ সবচেয়ে ভাল। কারন প্রায় সব ব্রোকার লিবার্টি রিসার্ভ সাপোর্ট করে। আপনার পছন্দের অধিকাংশ ব্রোকারে আপনি লিবার্টি রিসার্ভ দিয়ে ডিপোজিট করতে পারবেন। লিবার্টি রিসার্ভ সরাসরি ব্যাংকের মাধ্যমে উইথড্র করা যায় না। তাই আপনি যখন আপনার প্রফিট উইথড্র করতে চাবেন, অনলাইনে অনেক এক্সচেঞ্জার সাইট আছে যারা আপনাকে লিবার্টি রিসার্ভ এক্সচেঞ্জ করে আপনাকে ব্যাংক ট্রান্সফার করে দিবে।

MoneyBookers: ফরেক্সে ডিপোজিট করার জন্য মানিবুকারস ভাল একটি পেমেন্ট প্রসেসর। অনেক ব্রোকার মানিবুকারস সাপোর্ট করে। কিন্তু মানিবুকারসের আলাদা একটি সুবিধা রয়েছে। আপনি আপনার মানিবুকারস থেকে সরাসরি ব্যাংকে উইথড্র করতে পারবেন। আপনি আপনার ব্যাংকের Swift Code এবং অ্যাকাউন্ট নং দিয়ে উইথড্র চাইলে কয়েকদিনের মধ্যে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে তারা টাকা পাঠিয়ে দেবে। এমনকি আপনি আপনার ডেবিট/ক্রেডিট কার্ডেও মানিবুকারস থেকে উইথড্র করতে পারবেন।

Alertpay: অনেক ব্রোকার অ্যালার্ট-পে সাপোর্ট করে। তবে তা লিবার্টি রিসার্ভ এবং মানিবুকারসের মত এতো বেশী নয়। মানিবুকারসের মতোঅ্যালার্ট-পে থেকেও আপনি সরাসরি ব্যাংকে উইথড্র করতে পারবেন। এছাড়া অ্যালার্ট-পের আলাদা ডেবিট মাস্টারকার্ড রয়েছে। আপনি ২০$ এর বিনিময়ে তা সংগ্রহ করে সেই মাস্টারকার্ডের মাধ্যমে ATM Booth থেকেই টাকা উইথড্র করতে পারবেন।

Mastercard: অনেক ব্রোকার তাদের ট্রেডারদের মাস্টারকার্ড প্রদান করে থাকে। সেই মাস্টারকার্ডের মাধ্যমে আপনি ATM Booth থেকেই টাকা উইথড্র করে নিতে পারবেন।

ফরেক্স ব্রোকারগুলোর নিয়ম হল আপনি যে পেমেন্ট প্রসেসর দিয়ে ডিপোজিট করবেন, আপনাকে সেই পেমেন্ট প্রসেসর এবং সেই অ্যাকাউন্টেই উইথড্র করতে হবে। কিন্তু কিছু কিছু ব্রোকার যে মাধ্যম দিয়েই ডিপোজিট করা হোক না কেন, ব্যাংক বা তাদের মাস্টারকার্ডের মাধ্যমে উইথড্র করতে দেয়। যেমন ইন্সটাফরেক্সে আপনি যে পেমেন্ট প্রসেসর দিয়েই ডিপোজিট করুন, তাদের মাস্টারকার্ড দিয়ে উইথড্র করতে পারবেন।

অ্যাকাউন্ট ভেরিফিকেশন

প্রায় সব ফরেক্স ব্রোকারের সাথেই আইডেনটিটি ভেরিফাই করতে হয়। ভেরিফাই মানে আপনি যে তথ্য দিয়ে তাদের কোম্পানিতে জয়েন করেছেন এবং ট্রেড করছেন তা আসলেই সঠিক কিনা। অধিকাংশ ব্রোকারেই ভেরিফাই করতে হয়। কিন্তু কিছু কিছু ব্রোকারে ভেরিফাই না করেও ট্রেড করা যায়।
ভেরিফাই করতে কি কি ডকুমেন্টস দরকারঃ
  • আপনার পাসপোর্ট/ ন্যাশনাল আইডি কার্ড/ ড্রাইভিং লাইসেন্স - এর কম্পিউটার স্ক্যান কপি
  • আপনার অ্যাড্রেস ভেরিফিকেশন ডকুমেন্টস

পাসপোর্ট/ ন্যাশনাল আইডি কার্ড/ ড্রাইভিং লাইসেন্স - এর কম্পিউটার স্ক্যান কপিঃ

ভেরিফাই করার জন্য আপনার পাসপোর্ট/ ন্যাশনাল আইডি কার্ড/ ড্রাইভিং লাইসেন্স - এর কম্পিউটার স্ক্যান কপি ফরেক্স ব্রোকার সাইটে আপলোড করতে হবে। আপনি পাসপোর্ট অথবা ন্যাশনাল আইডি কার্ড অথবা ড্রাইভিং লাইসেন্স স্ক্যান করে তা ইমেজ ফরম্যাটে সেভ করে তা আপলোড করতে পারেন। আপনার যদি পাসপোর্ট/ ন্যাশনাল আইডি কার্ড/ ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকে, তবে আপনি ভেরিফাই করতে পারবেন না। ফরেক্স ব্রোকাররা স্কুল, কলেজ বা ইউনিভার্সিটির আইডি কার্ড দিয়ে ভেরিফাই করে না। কিন্তু কেউ কেউ বলেছে তারা নাকি ইউনিভার্সিটির আইডি কার্ড দিয়ে অ্যাকাউন্ট ভেরিফাই করেছে। সবচেয়ে ভাল হয় পাসপোর্ট থাকলে। কারন পাসপোর্ট আপনার সবসময়ই কাজে লাগবে। তাছাড়া বাংলাদেশের ন্যাশনাল আইডি কার্ডের অনেক তথ্য বাংলায় থাকায় অল্প কিছু ব্রোকার তা গ্রহন করে না।

অ্যাড্রেস ভেরিফিকেশন ডকুমেন্টসঃ

অ্যাড্রেস ভেরিফিকেশন ডকুমেন্টস ভেরিফাই করার মাধ্যমে আপনি নিশ্চিত করবেন যে আপনি ফরেক্স ব্রোকারে জয়েন করার সময় যে ঠিকানা দিয়েছেন তা সঠিক। আপনি অ্যাড্রেস ভেরিফিকেশন ডকুমেন্টস হিসেবে যেকোনো ইউটিলিটি বিল যেমন - মোবাইল বিল, ইন্টারনেট বিল, কারেন্ট-গ্যাস বিল দিতে পারেন। অর্থাৎ, যে বিলে ইংলিশে আপনার নাম, ঠিকানা লেখা আছে এবং যা ৩-৬ মাস এর পুরনো নয় তা আপনি ভেরিফাই করার জন্য ব্যবহার করতে পারেন। বাংলালায়ন, কিউবি ইত্যাদির বিল দিয়েও ভেরিফাই করা যাবে।

ভেরিফাই করা কি জরুরী?

হ্যাঁ। কারন ভেরিফাই করা ছাড়া আপনি অনেক ভাল ব্রোকারে ট্রেড করতে পারবেন না। এবং আপনি অনলাইনে যেই পছন্দসই ব্রোকারে ট্রেড করতে চাননা কেন, তারা ভেরিফাই চাবে। তাই ভেরিফাই এর ডকুমেন্টস জোগাড় করে রাখাটাই ভাল।

আমার ভেরিফাই করার ডকুমেন্টস নেই। আমি কি করবো?

আপনার যদি ভেরিফাই করার মত ডকুমেন্টস না থাকে তবে আপনি ভাল হয় একটি পাসপোর্ট ইস্যু করে নিন। এটা আপনার পরবর্তী জীবনে সবসময়ই কাজে লাগবে। অ্যাড্রেস ভেরিফাই এর জন্য ইন্টারনেট সার্ভিস প্রভাইডারের কাছে বিলের একটি প্রিন্টেড কপি দিতে বলুন।

ভেরিফাই ছাড়া ট্রেডিং?

হ্যাঁ। আপনি ভেরিফাই ছাড়াও ট্রেড করতে পারেন। ইন্সটাফরেক্সে ট্রেড করতে ভেরিফাই বাধ্যতামূলক নয়। আপনি কোন প্রকার ভেরিফাই ছাড়াই এই ব্রোকারে ট্রেড করতে পারেন। কিন্তু ইন্সটাফরেক্স কর্তৃপক্ষ যে কোনদিন আপনার কাছে ভেরিফাই এর ডকুমেন্টস চাওয়ার অধিকার রাখে। আরও অনেক ব্রোকারে ভেরিফাই বাধ্যতামূলক নয়। অনেক ব্রোকারে আপনি ভেরিফাই না করেও ট্রেড করতে পারবেন, কিন্তু বড় পেমেন্ট নেয়ার আগে অবশ্যই ভেরিফাই করতে হবে। FBS, Fxoptimax সহ অনেক ব্রোকারে ভেরিফাই না করেই ট্রেড শুরু করা যায়। কিন্তু বড় পেমেন্ট পেতে হলে আপনাকে তখন ভেরিফাই করতে হবে।

অ্যাকাউন্ট ওপেনিং ইনফর্মেশন

ফরেক্স আকাউন্ট ওপেনিং এর জন্য যা যা দরকারঃ
অধিকাংশ ফরেক্স ব্রোকার এর ক্ষেত্রে আকাউন্ট ওপেনিং এর সময় আপনাকে নিম্নোক্ত তথ্যাবলী প্রদান করতে হবেঃ
  • First Name (আপনার নামের প্রথম অংশ)
  • Last Name (আপনার নামের শেষাংশ)
  • Address (ঠিকানা)
  • Email Address (আপনার ইমেইল আইডি)
এগুলো বিভিন্ন সাইটে রেজিস্ট্রেশান করার সময় আপনি আগেও পূরণ করেছেন, সুতরাং আপনি এগুলোর সাথে পরিচিত। তবে নিম্নোক্ত বিষয়াবলীর সাথে আপনি পরিচিত নাও থাকতে পারেন যেগুলো অ্যাকাউন্ট ওপেনিং এর সময় আপনাকে সিলেক্ট করতে হবে।
  • Swap (সোয়াপ) হছে সুদ। আপনি সোয়াপ অপশন সিলেক্ট করলে বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুদের হার এর উপর ভিত্তি করে আপনি যে ট্রেড ওপেন করবেন, তার উপর সুদ অর্জন করবেন অথবা আপনাকে সুদ দিতে হবে। মুসলমানদের জন্য সুদ হারাম, আর তাই সোয়াপ না নেয়াই ভাল। আপনি সুদ না নিতে চাইলে Swap কে No সিলেক্ট করুন।
  • Leverage (লোন) বাংলাদেশে শেয়ার মার্কেট এ ব্যাংকগুলো যেখানে সরব্বচ্চ ১:২ অনুপাতে ব্যাংকগুলো লোণ দেয়, ফরেক্স এ সেখানে আপনি ফরেক্স ব্রোকারদের কাছ থেকে ১:৫০০ পর্যন্ত লোণ পেতে পারেন। কিছু কিছু ফরেক্স ব্রোকার এমনকি ১:১০০০ লোন ও দেয়, মানে ক্যাপিটাল এর উপর ১০০০ গুন পর্যন্ত লোন। লিভারেজ যত বেশি হবে, আপনি তত বড় ট্রেড ওপেন করতে পারবেন। আর তাই, ফরেক্স এ আপনি ১:১০০০ লিভারেজ ব্যাবহার করে ৫ মিনিতেই টাকা দ্বিগুণ করতে পারেন।তবে ভুলেও এই লোভটি করতে যাবেন না, সর্বদাই ট্রেড এ অল্প লিভারেজ ব্যাবহার করুন। মনে রাখবেন, যে পরিমান মার্কেট মুভমেন্ট আপনার অনুকুলে হলে আপনার ব্যালেন্স দিগুন হবে, ঠিক একই পরিমান মার্কেট মুভমেন্ট আপন হলে আপনার ব্যালেন্স শূন্য হবে। ১;৫০ লিভারেজ ফরেক্স ট্রেডিং এর জন্য যথেষ্ট।
  • Account Currency (অ্যাকাউন্ট কারেন্সি) - USD বা ডলার সিলেক্ট করাই শ্রেয় ।
  • Account Type আপনার ডিপোজিট এর উপর ভিত্তি করে ফরেক্স ব্রোকাররা বিভিন্ন রকম অ্যাকাউন্ট অফার করে। প্রতিটি ফরেক্স ব্রোকারের অফার স্বতন্ত্র। আপনার ডিপোজিট ১০০০ ডলার এর কম হলে Micro, ১০০০ - ১০,০০০ ডলার হলে Mini এবং ১০,০০০ ডলার বা তার উপরে হলে Standard সিলেক্ট করতে পারেন।

অনেক ফরেক্স ব্রোকার তাদের সাথে অ্যাকাউন্ট সত্যায়িত করা ছাড়া ডলার জমা/উত্তোলন (deposit/withdrawal)করতে দেয় না অথবা বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা আরোপ করে। এটা করতে তারা বাধ্য হয় তাদের রেগুলেটরদের মানি লন্ডারিং নীতিমালা মেনে চলার জন্য। সেক্ষেত্রে আপনাকে নিম্নোক্ত দুই ধরনের ডকুমেন্টের স্ক্যান আপনাকে আপলোড করতে হবে আপনার অ্যাকাউন্ট থেকে -

  • আপনার পাসপোর্ট / ড্রাইভিং লাইসেন্স / ন্যাশনাল আইডি কার্ডের স্ক্যান আপনার ছবি ভেরিফিকেশন এর জন্য।
  • বিদ্যুৎ / গ্যাস / পানির বিল অথবা ইন্টারনেট/মোবাইল বিল অথবা ব্যাংক স্টেটমেন্ট এর স্ক্যান আপনার ঠিকানা ভেরিফিকেশন এর জন্য।

এটা আন্তর্জাতিক নিয়ম। তবে সব বিভিন্ন দেশের রেগুলেশন আলাদা আলাদা। আর তাই কিছু ফরেক্স ব্রোকার ভেরিফিকেশন করতে বলে না।

যেসব ব্রোকার অ্যাকাউন্ট ভেরিফিকেশন চায়, সেসব ফরেক্স ব্রোকার এর সাথে আগে অ্যাকাউন্ট ভেরিফ্যাই করে তারপর ডিপোজিট করা ভালো।

আপনার প্রথম ট্রেড

আমরা ফরেক্স সম্পর্কে অনেক কিছুই জেনেছি। ডেমো অ্যাকাউন্টও ওপেন করেছি। এখন আমরা ট্রেড শুরু করব। কিভাবে আমরা একটি ট্রেড ওপেন করে তা ক্লোজ করতে পারি তা এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হবে।
মেটাট্রেডারে অ্যাকাউন্টে লগিন করার পর এই স্ক্রীনটি দেখতে পাবেন।


EURUSD তে ট্রেড ওপেন করার জন্য "Market Watch" উইন্ডো থেকে EURUSD তে ডাবল ক্লিক করুন।


 নিচের মত একটি উইন্ডো ওপেন হবে। EURUSD বাই করতে চাইলে "BUY" এ ক্লিক করুন।


নিচের মত একটি ট্রেড ওপেন হবে। স্প্রেডের কারনে ট্রেডটি কিছু লসে ওপেন হবে।
 
Stop loss বা Take profit সেট করতে চাইলে SL বা TP তে ডাবল ক্লিক করুন।

একটি উইন্ডো ওপেন হবে। সেখান থেকে আপনি স্টপ লস এবং টেক প্রফিট সেট করতে পারবেন।
 


দেখুন স্টপ লস এবং টেক প্রফিট সেট হয়ে গেছে। ঐ প্রাইসে গেলে ট্রেড একাকী ক্লোজ হয়ে যাবে।


ট্রেডটি এখন $১ লাভে আছে। এখন আপনার ইকুইটি $৫০০১, কিন্তু ব্যালেন্স $৫০০০. ট্রেডটি ক্লোজ করে দিলে আপনার ব্যালেন্স $৫০০১ হয়ে যাবে। SL/TP প্রাইসে গেলে ট্রেডটি একাকী ক্লোজ হয়ে যাবে। কিন্তু আপনি যদি এখনই ক্লোজ করে দিতে চান, তবে আপনি প্রফিটের ওপর ডাবল ক্লিক করুন।






 দেখবেন ট্রেড ক্লোজ করার জন্য একটি উইন্ডো ওপেন হবে। হলুদ ক্লোজ বাটনে ক্লিক করুন।


ট্রেডটি $১ প্রফিটে ক্লোজ হয়ে গেছে।
 


এখন আপনার নতুন ব্যালেন্স $৫০০১.

কিভাবে ফরেক্সে লাভ/লস হয়

ফরেক্স মার্কেটে আপনি বাই (buy) অথবা সেল (sell) করবেন।
একটি ট্রেড খোলা খুবই সোজা। ট্রেড খোলার পদ্ধতি সহজ এবং আপনার যদি স্টক মার্কেটে ট্রেড করার অভিজ্ঞতা থাকে তবে আপনি তা আর তাড়াতাড়ি বুঝতে পারবেন।
মনে করুন আপনি ১.১৮০০ এক্সচেঞ্জ রেটে  EUR/USD - তে ১০,০০০ ইউরো কিনলেন $১১,৮০০ ডলার দিয়ে। দুই সপ্তাহ পর EUR/USD এক্সচেঞ্জ রেট বেড়ে ১.২৫০০ হল। তখন আপনি $১২,৫০০ ডলারে তা বিক্রি করলে আপনার লাভ হবে $৭০০ ডলার।
এক্সচেঞ্জ রেট হল একটি কারেন্সির সাপেক্ষে আরেকটি কারেন্সির দামের অনুপাত। যেমনঃ USD/CHF এর এক্সচেঞ্জ রেট নির্দেশ করে, কত ইউ. এস. ডলার এর বিনিময়ে ১ সুইস ফ্রাঙ্ক কেনা যাবে, অথবা ১  ইউ. এস. ডলার কিনতে কত সুইস ফ্রাঙ্ক প্রয়োজন।
কিভাবে ফরেক্স কোটেশন পড়তে হয়
প্রতিটি ট্রেডে আপনি একই সাথে একটি কারেন্সি কিনেন এবং আরেকটি বিক্রি করেন। তাই ফরেক্স মার্কেটে কারেন্সি পেয়ারের দাম কোটেশন এর মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়।
GBP/USD এর ফরেন এক্সচেঞ্জ রেট নিম্নরূপঃ

স্লাশ (/) এর আগের কারেন্সিকে বলা হয় বেস (base) কারেন্সি এবং স্লাশ (/) এর পরের কারেন্সিকে বলা হয় কিউটো (quote) কারেন্সি।
এখানে GBP হল বেস (base) কারেন্সি এবং USD হল কিউটো (quote) কারেন্সি।
বাই (buy) করার সময়, এক্সচেঞ্জ রেট নির্দেশ করে ১ ইউনিট বেস কারেন্সি কেনার জন্য কত ইউনিট কিউটো কারেন্সি দিতে হবে। উদাহারনস্বরূপঃ ১ ব্রিটিশ পাউন্ড কেনার জন্য ১.৫১২৫ ইউ. এস. ডলার দিতে হবে।
সেল (sell) করার সময়,  এক্সচেঞ্জ রেট নির্দেশ করে ১ ইউনিট বেস কারেন্সি সেল করলে কত ইউনিট কিউটো কারেন্সি পাওয়া যাবে। উদাহারনস্বরূপঃ ১ ব্রিটিশ পাউন্ড বিক্রি করলে আপনি ১.৫১২৫ ইউ. এস. ডলার পাবেন।
বেস কারেন্সি হল বাই ও সেল এর মূল ভিত্তি। যদি আপনি EUR/USD বাই করেন, তবে আপনি বেস কারেন্সি EUR কিনছেন এবং একই সাথে কিউটো কারেন্সি USD বিক্রি করছেন। সহজ কথায়, EUR কেনা, USD বিক্রি করা।
আপনি কারেন্সি পেয়ারটি বাই করবেন যদি আপনি বিশ্বাস করেন যে, কিউটো কারেন্সির তুলনায় বেস কারেন্সি শক্তিশালী হবে। এর আপনি সেল করবেন যদি আপনি মনে করেন কিউটো কারেন্সির তুলনায় বেস কারেন্সি দুর্বল হয়ে যাবে।
লং/সর্ট (long/short):
প্রথমে আপনাকে ঠিক করতে হবে আপনি বাই করবেন না সেল করবেন।
আপনি যদি বাই করতে চান (বেস কারেন্সি কেনা এবং কিউটো কারেন্সি বিক্রি করা), তার মানে আপনি চাচ্ছেন বেস কারেন্সির দাম বেড়ে যাক এবং আপনি সেটা বিক্রি করে দিবেন আরও বেশি দামে। ট্রেডারদের ভাষায় একে বলে লং (long) অথবা লং পজিশন নেয়া। মনে রাখবেন, লং = বাই (long = buy)।
আপনি যদি সেল করতে চান (বেস কারেন্সি বিক্রি করা এবং কিউটো কারেন্সি কেনা), তার মানে আপনি চাচ্ছেন বেস কারেন্সির দাম কমে যাক এবং আপনি সেটা কিনবেন আরও কম দামে। ট্রেডারদের ভাষায় একে বলে শর্ট (short) অথবা শর্ট পজিশন নেয়া। মনে রাখবেন, শর্ট = সেল(short= sell)।

বিড/আস্ক (bid/ask):

সব ফরেক্স কোটেশনে ২ টি প্রাইস দেখান হয়। বিড এবং আস্ক। প্রায় সবক্ষেত্রে বিড প্রাইস, আস্ক প্রাইস থেকে কম হয়।
বিড হল এমন একটি প্রাইস যে দামে ব্রোকার কিউটো কারেন্সির পরিবর্তে বেস কারেন্সি কিনতে চায়। অর্থাৎ, সেল করার জন্য বিড হল সবচেয়ে ভাল প্রাইস।
আস্ক হল এমন একটি প্রাইস যে দামে ব্রোকার কিউটো কারেন্সির পরিবর্তে বেস কারেন্সি বিক্রি করতে চায়। অর্থাৎ, বাই করার জন্য আস্ক হল সবচেয়ে ভাল প্রাইস।
বিড এবং আস্ক এর পার্থক্যই স্প্রেড (spread) নামে পরিচিত।
EUR/USD -র উপরের কোটেশনে বিড প্রাইস হল 1.3456 এবং আস্ক প্রাইস হল 1.3458.
অর্থাৎ, এখানে স্প্রেড 2 পিপস।
আপনি যদি সেল ক্লিক করেন তবে আপনি 1.3456 -এ সেল করবেন। আর যদি বাই ক্লিক করেন, তবে আপনি 1.3458 -এ বাই করবেন।

কারেন্সি জোড়/পেয়ার

ফরেক্স ট্রেডিং হল একই সাথে একটি কারেন্সির ক্রয় এবং অন্য কারেন্সির বিক্রয়। কারেন্সি কোন ব্রোকার অথবা ডিলারের মাধ্যমে এবং Pair বা জোড়ায় ট্রেড করা হয়।
উদাহারনসরূপঃ ইউরো ও ইউ. এস. ডলার এর জোড় EUR/USD অথবা ব্রিটিশ পাউন্ড ও জাপানিজ ইয়েন এর জোড় GBP/JPY.
আপনি যখন ফরেক্স ট্রেডিং করবেন, আপনাকে Pair বা জোড় এর মাধ্যমে ক্রয়/বিক্রয় করতে হবে।
মনে করুন, এই রশির দুই প্রান্তে দুটি দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা রয়েছে। এক্সচেঞ্জ রেট ওঠা-নামা করে, কখন কোন কারেন্সি শক্তিশালী তার ওপর ভিত্তি করে।
প্রধান কারেন্সি পেয়ার-সমূহ:
নিচের কারেন্সি পেয়ারগুলোকে প্রধান কারেন্সি পেয়ার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই কারেন্সি পেয়ার গুলো USD পেয়ার এবং সহসাই ট্রেড করা হয়। এই প্রধান পেয়ার গুলোর তারল্য সবচেয়ে বেশি এবং এগুলো বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ট্রেড করা হয়।


প্রধান ক্রস-কারেন্সি অথবা অপ্রধান কারেন্সি পেয়ার-সমূহ:
ইউ. এস. ডলার ব্যাতিত কারেন্সি পেয়ারসমূহকে ক্রস-কারেন্সি পেয়ার অথবা শুধু ক্রস পেয়ার বলা হয়। প্রধান ক্রসগুলো অপ্রধান কারেন্সি পেয়ার নামেও পরিচিত। সবচেয়ে বেশি ট্রেডকৃত ক্রস পেয়ারগুলো এসেছে - EUR, GBP এবং JPY থেকে।

 

Euro Crosses

 

Yen Crosses

 

Pound Crosses

 

Other Crosses

 

Exotic Pairs

একটি প্রধান কারেন্সির সাথে আরেকটি কারেন্সি পরিপুরক হিসেবে যেই পেয়ারে যুক্ত হয়, তাকে Exotic পেয়ার বলে।


কিছু কিছু ফরেক্স ব্রোকারে এই কারেন্সি পেয়ারগুলো ট্রেড করা যায়। এগুলো

প্রধান এবং ক্রস পেয়ার গুলোর মত অত্যাধিক ট্রেড করা হয়না।


Exotic পেয়ারগুলোর স্প্রেড EUR/USD অথবা USD/JPY এর তুলনায় দুই অথবা
 
তিন গুন বেশি। তাই যদি আপনি এই Exotic পেয়ারসমূহ ট্রেড করতে চান, তবে তা ভেবে 
 
করবেন।

লিভারেজ কি?

লিভারেজ বা মার্জিন লোন হচ্ছে আপনার ক্যাপিটাল এর উপর সর্বোচ্চ কত গুন লোন আপনার ফরেক্স ব্রোকার আপনাকে দিবে।

ধরুন, আপনার ব্যাল্যান্স বা ক্যাপিটাল হচ্ছে ১০০ ডলার । আপনি যদি ১;২০০ লিভারেজ ব্যাবহার করেন, তাহলে আপনি ট্রেড করার সময় আপনার ব্রোকার আপনাকে সর্বোচ্চ্য ২০০ গুন পর্যন্ত লোন দিবে। এখন এইটা আপনার ব্যাপার আপনি কত পরিমান লোন নিবেন। সুতরাং, ১০ ডলার দিয়ে ১০x২০০=২০০০ ডলার ট্রেড করতে পারবেন।


ভালোই তো .... যদি ২০০ গুন পর্যন্ত লোন পাই, তাহলে নিবো না কেন? স্টক মার্কেটে তো ১:২ লোনই দিতে চায় না।

ধরুন, আপনি ১০ ডলার ডিপোজিট করলেন, ঠিক করলেন লিভারেজ ব্যাবহার করবেন, ১:১ , মানে কোন লোন নিবেন না। সেক্ষেত্রে, ব্রোকার আপনাকে বড় সাইজের কোন ট্রেড ওপেন করতে দিবে না। ওই ১০ ডলার দিয়ে যতটুকু বড় ট্রেড ওপেন করা যায়, ঠিক ততটুকুই ট্রেড ওপেন করতে দিবে। সেক্ষেত্রে, মার্কেট আপনার অনুকুলে ৫০ পিপস মুভ করলে হয়ত আপনার ১ ডলার লাভ হবে। সাধারনত বিভিন্ন কারেন্সি পেয়ার প্রতিদিন ১০০-৩০০ পিপস মুভ করে।

তো আপনি ভাবলেন, লোন নিবেন ও আরও বড় ট্রেড ওপেন করবেন যাতে লাভ বেশি হয়। আপনাকে যদি কোন ব্রোকার ১:২০০ লিভারেজ অফার করে, তাহলে আপনি ইচ্ছা করলে ১০ ডলার দিয়ে ২০০০ ডলার ট্রেড করতে পারবেন। আর তাই, আগে যা লাভ হতো, এখন তার থেকে ২০০ গুন বেশি লাভ হবে। একইভাবে, আগে যা লস হতো, আপনি যদি ১:২০০ লিভারেজ এর পুরো ব্যাবহার করেন, লসও তার ২০০ গুন বেশি হবে। যদি আগে মার্কেট আপনার অনুকুলে ৫০ পিপস মুভ করলে ১ ডলার লাভ হতো, এখন তাহলে ২০০ ডলার লাভ হবে।

ব্রোকার লোন আপনাকে ঠিকই দিবে। লাভ হলে তো ভালোই, লস এর ক্ষেত্রে আপনার লস যদি কোন সময় আপনার ক্যাপিটাল এর সমান হয়, তাহলে সাথে সাথে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার ট্রেড ক্লোজ হয়ে যাবে। ব্রোকার কোন অবস্থাতেই আপনার যা ক্যাপিটাল আছে, তার থেকে বেশি লসে আপনার ট্রেড চলতে দিবে না। এইটাকে ফরেক্সে মার্জিন কল বলে, বাংলাদেশের শেয়ার মার্কেটে বলে ফোর্সড সেল।

ভাই, এইটা তো ভয়ানক কথা বললেন! বেশি লিভারেজ ব্যাবহার করে ট্রেড ওপেন করতে গিয়ে আমার লস যদি ক্যাপিটাল এর সমান হয়, তাহলে কি ফতুর হয়ে যাব নাকি?

সোজা বাংলা কথায়, হ্যা! সুতরাং, লিভারেজ যাই সেট করুন না কেন, ট্রেড খোলার সময় কখনই ব্যালেন্স এর অনুপাতে বেশি বড় ট্রেড খুলবেন না। কিছু মানুষ বলে যে ফরেক্স নাকি একদিনেই ক্যাপিটাল দুই গুন, তিন গুন করা সম্ভভ। ভাগ্য থাকলে অবশই সম্ভব। কিন্তু এভাবে ঝুকি নিয়ে ট্রেড করলে ধরা একদিন না একদিন খেতেই হবে।

স্প্রেড, স্টপ লস এবং টেক প্রফিট

স্প্রেডঃ
আপনি একটি ট্রেড ওপেন করলেই দেখবেন ট্রেডটি কিছুটা লসে ওপেন হবে। এটাকেই স্প্রেড বলে। ফরেক্স ব্রোকার একটি ট্রেড ওপেন করার জন্য এই ফি কমিশন বা চার্জ হিসেবে কেটে নেয়।
আপনি ধরুন ১.৭৪৪৫ এ GBPUSD বাই করলেন, কিন্তু তা ১.৭৪৪৯ এ ওপেন হবে অর্থাৎ ৩ পিপস ফি প্রযোজ্য হয়েছে। আপনি যদি $১ পিপস ভ্যালু দিয়ে ট্রেড ওপেন করে থাকেন তবে ট্রেডটি $৩ লসে ওপেন হবে।


বিভিন্ন পেয়ারের স্প্রেড বিভিন্ন হয়। আবার বিভিন্ন ব্রোকার ভেদেও স্প্রেড কম বেশি হতে পারে। যেমন Instaforex এ EURUSD এর স্প্রেড ৩ পিপস। কিন্তু Fxoptimax এ EURUSD এর স্প্রেড ২ পিপস। কিছু কিছু পেয়ার এ স্প্রেড ৩০ পিপস পর্যন্ত বা তার বেশী হতে পারে। তাই অপরিচিত পেয়ার ট্রেড করার আগে স্প্রেড কত তা দেখা নেয়া উচিত।

স্টপ লস এবং টেক প্রফিটঃ
স্টপ লস (stop loss): স্টপ লসের মাধ্যমে আপনি আপনার লসে থাকা ট্রেডটি কোন প্রাইস এ বন্ধ করে দিতে চান তা ঠিক করে দিতে পারবেন।
টেক প্রফিট (take profit): টেক প্রফিটের মাধ্যমে আপনি আপনার লাভে থাকা ট্রেডটি কোন প্রাইসে বন্ধ করে দিতে চান তা ঠিক করে দিতে পারবেন।
ধরুন, আপনি ১.৩৫৪০ তে একটি বাই ট্রেড ওপেন করলেন। আপনি চাচ্ছেন ৫০ পিপস লাভ করবেন এবং ৫০ পিপসের বেশি লস করবেন না। তাহলে আপনি ৫০ পিপস স্টপ লস এবং ৫০ পিপস টেক প্রফিট সেট করে রাখতে পারেন। আপনার কম্পিউটার বন্ধ থাকলে বা কোন স্পাইকের ফলে হঠাৎ প্রাইস বেড়ে বা কমে গেলে, স্টপ লস বা টেক প্রফিটের প্রাইসে অটোমেটিক ভাবে আপনার ট্রেড ক্লোজ হয়ে যাবে।

টাইমফ্রেম

টাইমফ্রেম:
টাইমফ্রেমের মাধ্যমে আমরা কোন নির্দিষ্ট ৫ মিনিট, ১৫ মিনিট, ১ ঘন্টা, ১ সপ্তাহ বা ১ মাসে প্রাইস সর্বোচ্চ কত বেড়েছিল বা কমেছিল ইত্যাদি আমরা জানতে পারি। যদি আমরা ১টি ৫ মিনিটের ক্যানডেল দেখি, তাহলে তা থেকে আমরা বুঝতে পারবোঃ
  • কোন প্রাইসে ক্যানডেলটি শুরু হয়েছে
  • কোন প্রাইসে ক্যানডেলটি ক্লোজ হয়েছে
  • প্রাইস ঐ ৫ মিনিতে সর্বোচ্চ কত বেড়েছিল
  • প্রাইস ঐ ৫ মিনিতে সর্বনিম্ন কত কমেছিল
সাধারনত নিম্নোক্ত টাইমফ্রেমগুলো বেশী ইউজ হয় কারন এগুলো মেটাট্রেডার ৪ এ দেয়া আছে। কিন্তু মেটাট্রেডার ৫ এ আপনি আরো কাস্টম টাইমফ্রেম ব্যবহার করতে পারবেন।
  • M1
  • M5
  • M15
  • M30
  • H1
  • H4
  • D1
  • W1
  • MN
আপনি কোন নির্দিষ্ট টাইমফ্রেমের কোন ১টি ক্যানডেল দেখলেই বুঝতে পারবেন ঐ সময়ে প্রাইসের মুভমেন্ট কেমন হয়েছিল।
  
লাল দাগ দিয়ে সিলেকটেড ক্যানডেলটি দেখুন। এটা দেখে ৪ ঘন্টায় প্রাইস অ্যাকশন বোঝা যাচ্ছে।

কোন টাইমফ্রেমে ট্রেড করবো?
এটা নির্ভর করে আপনি কি ধরনের ট্রেড করতে চান। আপনি যদি স্ক্যাল্পিং পছন্দ করেন তবে আপনার উচিত M1, M5 অথবা M15 এ ট্রেড করা। আপনি যদি সাধারন কিংবা একটু লং টার্ম ট্রেড করতে চান, তবে আপনার M30, H1 অথবা H4 এ ট্রেড করা উচিত। সুইং বা পজিশন ট্রেড করতে আগ্রহী হলে আপনার সপ্তাহ অথবা মাসের টাইমফ্রেমগুলোকে অ্যানালাইসিস করা উচিত।

লট/ভলিউম

লট/ভলিউমঃ
লট ব্যাপারটি অনেক সহজ। কিন্তু আপনি যখন ইউনিটের হিসাবে যাবেন, তখন তা আপনার কাছে জটিল মনে হবে। তাই আমরা এখানে ইউনিটের হিসাবে যাব না বরং সহজ ভাবে বোঝানোর চেষ্টা করবো।

ফরেক্স মার্কেটে আমরা প্রতি পিপস মুভমেন্টে লাভ করতে পারি। অর্থাৎ প্রাইস ১.১৭১০ থেকে ১.১৭২০ এ গেলে আমাদের ১০ পিপস লাভ বা লস হবে। লট/ভলিউমের মাধ্যমে আমরা নির্ধারণ করে দিবো যে প্রতি পিপস আমাদের অনুকূলে বা প্রতিকূলে গেলে আমাদের কি পরিমান লাভ বা লস হবে।
ফরেক্স ব্রোকারদের আমরা সুবিধার জন্য ৩ ভাগে ভাগ করছি।
  •  স্ট্যান্ডার্ড লট ব্রোকার
  •  মিনি লট ব্রোকার
  •  মাইক্রো লট ব্রোকার
ট্যান্ডার্ড লট ব্রোকারে ১ লট = $১০/পিপস। কিন্তু মিনি লট ব্রোকারে ১ লট = $১/পিপস। আর মাইক্রো লট ব্রোকারে ১০ লট = $১/পিপস।
তারমানে, আপনি স্ট্যান্ডার্ড লট ব্রোকারে যদি ১ লট দিয়ে একটি ট্রেড ওপেন করেন এবং ১০ পিপস আপনার অনুকুলে যায় তবে আপনার লাভ হচ্ছে $১০x১০=$১০০. অনুরুপ লস হলেও $১০০ হবে।
কিন্তু, আপনি মিনি লট ব্রোকারে যদি ১ লট দিয়ে একটি ট্রেড ওপেন করেন এবং ১০ পিপস আপনার অনুকুলে যায় তবে আপনার লাভ হচ্ছে $১x১০=$১০. অনুরুপ লস হলেও $১০ হবে।
আর, আপনি মাইক্রো লট ব্রোকারে যদি ১ লট দিয়ে একটি ট্রেড ওপেন করেন এবং ১০ পিপস আপনার অনুকুলে যায় তবে আপনার লাভ হচ্ছে $০.১x১০=$১. অনুরুপ লস হলেও $১ হবে।
 
স্ট্যান্ডার্ড লট ব্রোকারেঃ
  • ১ স্ট্যান্ডার্ড লট = $১০/পিপস
  • ০.১ স্ট্যান্ডার্ড লট = $১/পিপস
  • ০.০১ স্ট্যান্ডার্ড লট = $০.১০/পিপস
  • ১০ স্ট্যান্ডার্ড লট = $১০০/পিপস
মিনি লট ব্রোকারেঃ
  • ১ মিনি লট = $১/পিপস
  • ০.১ মিনি লট = $০.১০/পিপস
  • ০.০১ মিনি লট = $০.০১/পিপস
  • ১০ মিনি লট = $১০/পিপস
মাইক্রো লট ব্রোকারেঃ
  • ১ মাইক্রো লট = $০.১০/পিপস
  • ০.১ মাইক্রো লট = $০.০১/পিপস
  • ০.০১ মাইক্রো লট = $০.০০১/পিপস
  • ১০ মাইক্রো লট = $১/পিপস
নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন স্ট্যান্ডার্ড লট, মিনি লট এবং মাইক্রো লটের পার্থক্য। ব্রোকাররা তাদের সুবিধা মত লট সাইজ ঠিক করে।
অধিকাংশ ব্রোকার আপনাকে সর্বনিম্ন ০.০১ লটে ট্রেড করতে দিবে। অর্থাৎ, স্ট্যান্ডার্ড লট ব্রোকারে আপনি সর্বনিম্ন পিপ ভ্যালু নিতে পারবেন ১০ সেন্ট। কিন্তু মিনি লট ব্রোকারে আপনি সর্বনিম্ন পিপ ভ্যালু নিতে পারবেন ১ সেন্ট। আর মাইক্রো লট ব্রোকারে আপনি সর্বনিম্ন পিপ ভ্যালু নিতে পারবেন ০.১ সেন্ট। সুতরাং আপনার ক্যাপিটাল যদি কম হয়ে থাকে, তাহলে আপনি মিনি লট বা মাইক্রো লট ব্রোকারে কম রিস্ক নিয়ে ট্রেড করতে পারবেন।
শুধু যে আপনি ১ লট, ০.১ লট অথবা ০.০১ লটে ট্রেড করতে পারবেন তাই নয়, আপনি চাইলে ২.৫ লট, ১.৩ লট এরকম কাস্টম লটেও ট্রেড করতে পারেন।
কিভাবে বুঝবো আমার ব্রোকারটি মাইক্রো লট, মিনি লট না স্ট্যান্ডার্ড লট?
ট্রেডিং পয়েন্টের মাইক্রো অ্যাকাউন্টে আপনি মাইক্রো লটে ট্রেড করতে পারবেন। ইন্সটাফরেক্স, হটফরেক্স, লাইটফরেক্স ইত্যাদি ব্রোকারগুলো মিনি লট ব্রোকার। এফ.বি.এস, এফ. এক্স. অপ্টিমাক্স ইত্যাদি ব্রোকারগুলো স্ট্যান্ডার্ড লট ব্রোকার। আপনি যদি না জানেন আপনার ব্রোকারটি মাইক্রো লট, মিনি লট না ষ্ট্যাণ্ডার্ড লট, তাহলে ব্রোকারের লাইভ সাপোর্টে প্রশ্ন করুন। অনেক সময় তাদের ওয়েবসাইটেও দেয়া থাকে। অথবা তাদের সাথে একটি ডেমো অ্যাকাউন্ট খুলে ১ লট দিয়ে একটি ট্রেড ওপেন করুন। যদি দেখেন যে প্রতি পিপস পরিবর্তনে $১০ ডলার করে লাভ বা লস হচ্ছে তবে বুঝবেন এটা স্ট্যান্ডার্ড লট ব্রোকার। আর যদি দেখেন যে $১ ডলার করে পরিবর্তন হচ্ছে, তাহলে বুঝবেন এটা মিনি লট ব্রোকার। ১০ সেন্ট করে পরিবর্তন হলে বুঝবেন তা মাইক্রো লট ব্রোকার। কিন্তু কিছু কিছু ব্রোকারের একেক অ্যাকাউন্ট টাইপে একেক রকম লট সাইজ থাকে।
 
 

পিপস এবং পিপেটিস

PIPS (পিপস):

ফরেক্স মার্কেটে কোন কারেন্সি পেয়ারের দশমিকের পরে ৪থ সংখ্যার প্রতি এক একক পরিবর্তন বা মুভমেন্টকে PIP বা পিপ বলে। PIPS অথবা পিপস হচ্ছে PIP এর বহুবচন, যেমনঃ Market has changed 120 pips today. অর্থাৎ, মার্কেট আজকে ১২০ পিপস পরিবর্তিত হয়েছে। অনেকে পিপস কে পয়েন্ট ও বলে। তবে আন্তর্জাতিকভাবে pips ই বহুল প্রচলিত।


পিপস কি , তা বুঝতেই অধিকাংশ মানুষ প্রচুর সময় ব্যয় করে ফেলে। দেখা যাক, আমরা কিছু উদহারনের সাহায্যে সহজ করে শিখতে পারি কিনা।


উদহারন ১:

আপনি আপনার টার্মিনাল (আপনার ব্রোকার প্রদত্ত ট্রেড করার সফটওয়ার) টি ওপেন করলেন। দেখলেন, EUR/USD ছিল ১.৪৩৪০ এবং বর্তমানে তা ১.৪৩৪৫ ।


কয় পিপস পরিবর্তন হল?

বের করার নিয়মঃ বেশি-কম = ১.৪৩৪৫ - ১.৪৩৪০ = ০.০০০৫

আমি আগেই বলেছি পিপস গণনা শুরু হয়, দশমিকের পর চার নাম্বার সংখ্যা থেকে। ভুলে যান দশমিক, আসুন সহজ করে হিসাব করিঃ

৪৩৪৫-৪৩৮০ = ৫

অর্থাৎ, মার্কেট ৫ পিপস পরিবর্তিত হয়েছে।

তাহলে এবার বলুন,

উদহারন ২:


GBB/USD ১.৫৬৩০ থেকে ১.৫৬৩৯ তে গেল। মার্কেট কত পিপস মুভ করল?

৫৬৩৯-৫৬৩০ = ৯ পিপস।

আরও কিছুঃ

মার্কেট মুভমেন্ট (EUR/USD)

আগে ছিল ১.৩৪৫০ , বর্তমানে ১.৩৪৩২ = ৩৪৫০ - ৩৪৩২ = ১৮ পিপস মার্কেট মুভমেন্ট

আগে ছিল ১.৩৪৫০ , বর্তমানে ১.৩৫৫০ = ৩৫৫০ - ৩৪৫০ = ১০০ পিপস মার্কেট মুভমেন্ট

আগে ছিল ১.৩৭৫০ , বর্তমানে ১.৩৪৩২ = ৩৭৫০ - ৩৪৩২ = ৩১৮ পিপস মার্কেট মুভমেন্ট

আগে ছিল ১.৪৪৫০ , বর্তমানে ১.৩৪৫০ = ৪৪৫০ - ৩৪৫০ = ১০০০ পিপস মার্কেট মুভমেন্ট


আশা করি বুঝতে পেরেছেন। নিজেকে টেস্ট করে নিনঃ

ধাঁধা ২:

EUR/USD আগে ছিল ১.৩৫৭০ , বর্তমানে ১.৩৫৫০। 

মার্কেট কত পিপস মুভ করল?

যদি পারেন তাহলে বুঝবেন আপনি ঠিক পথেই এগোচ্ছেন।

পিপস সম্পর্কে স্বছ ধারণা থাকা প্রয়োজন, কেননা -

ফরেক্স মার্কেটের মুভমেন্ট পিপস এর সাহায্যে গণনা করা হয়। প্রায়শই শুনবেন ইউরো/উ.এস.ডি আজকে ২০০ পিপস বেড়েছে। মার্কেট খুব মুভ করছে, ৫ মিনিটেই ১০০ পিপস বেড়েছে ইত্যাদি।


Pipettes (পিপেটিস):
কিছু কিছু ব্রোকারে প্রাইস দশমিকের পরে ৫ ডিজিট থাকে। যেমনঃ ১.৪২৫৬১. এই পঞ্চম ডিজিট তাই হল পিপেটি। সুতরাং প্রাইস যদি ১.৪২৫৬১ থেকে ১.৪২৬৬৭ এ যায়, তবে বুঝতে হবে ১০ পিপস ৬ পিপেটিস বেড়েছে অথবা ১০৬ পিপেটিস পরিবর্তন হয়েছে।

ফরেক্স মার্কেট বেসিক

Currency Pair (কারেন্সি পেয়ার):

শেয়ার মার্কেটের নিয়ম হচ্ছে যেকোনো শেয়ারের মূল্য সে দেশের মুদ্রার বিপরীতে নির্ধারিত হবে। যেমন, আমাদের দেশের শেয়ার মার্কেটে কোনো শেয়ারের মূল্য টাকায় নির্ধারিত হয়।

কিন্তু ফরেক্স মার্কেটে এভাবে কোন দেশের মূদ্রা বা কারেন্সির মান নির্ধারণ অসম্ভব। শুধু ইউরো বা ডলারের কোন মূল্য থাকতে পারে না। যেমনঃ ১ ডলার দিয়ে ৭৩ বাংলাদেশী টাকা পাওয়া যায়। এবার ১ ডলার দিয়ে মাত্র ০.৭০ ইউরো অথবা ০.৯৩ অস্ট্রেলিয়ান ডলার পাওয়া সম্ভব। আবার যদি জাপানিজ ইয়েনের কথা ধরি, তাহলে ১ ডলার দিয়ে আপনি ৮০ ইয়েন পাবেন। তাহলে, ডলারর মূল্য আসলে কোনটি? বিভিন্ন দেশের মানুষই তো ফরেক্স মার্কেটে ট্রেড করে, কোন দামে তারা ডলার কিনবে?

এই জন্যই ফরেক্স মার্কেটে সবকিছু কারেন্সি পেয়ারের মাধ্যমে ট্রেড হয়। 

যেমন ধরুন, EUR/USD (ইউরো/উএসডি), একটি কারেন্সি পেয়ার। বর্তমানে 1


EUR/USD = 1.4434 . এর মানে হচ্ছে ১ ইউরো দিয়ে আপনি ১.৪৪৩৪ ডলার পাবেন।

ওহ, বলতে ভুলে গেছি, USD = United States Dollar বা আমেরিকান ডলার। সহজ 
করে বললে, যেটাকে আমরা ডলার বলে চিনি।

চলুন দেখে নেই আরও কিছু কারেন্সি পেয়ারঃ

1 AUD/USD = 1.0543 , এর মানে হচ্ছে ১ অস্ট্রেলিয়ান ডলার দিয়ে আপনি ১.০৫৪৩ 

আমেরিকান ডলার পাবেন।

1 GBP/USD = 1.6422 , এর মানে হচ্ছে ১ পাউন্ড দিয়ে আপনি ১.৬৪২২ আমেরিকান ডলার পাবেন।
1 NZD/USD = 0.8177 , এর মানে হচ্ছে ১ নিউজিল্যান্ড ডলার দিয়ে আপনি ০.৮১৭৭ আমেরিকান ডলার পাবেনচা
1 USD/JPY = 80.29 , এর মানে হচ্ছে ১ ডলার দিয়ে আপনি ৮০.২৯ জাপানিজ ইয়েন পাবেন।
1 EUR/JPY = 115.91 , এর মানে হচ্ছে ১ ইউরো দিয়ে আপনি ১১৫.৯১ জাপানিজ ইয়েন পাবেন।

এখন বুঝলেন কারেন্সি পেয়ারের ব্যাপারটা?

ভাই, আমি যদি একটু ঘুরায় লিখি? মানে আপনি তো লিখলেন যে, 1 EUR/USD = 1.4434 আমি যদি এভাবে EUR/USD না লিখে USD/EUR লিখি, তাহলে কোনো সমস্যা আছে?

অবশ্যই নেই। তবে মনে রাখবেন, কারেন্সি পেয়ারের প্রথম কারেন্সি নির্দেশ করে তা দিয়ে আপনি কত পরের কারেন্সিটা পাবেন। 

1 EUR/USD = 1.4434 . এর মানে হচ্ছে ১ ইউরো দিয়ে আপনি ১.৪৪৩৪ ডলার পাবেন।

তাহলে, 1 USD/EUR নির্দেশ করবে ১ ডলার দিয়ে আপনি কত ইউরো পাবেন। উত্তর হবে, ঠিক উল্টো, 1/1.4434 বা ০.6928

একটা ছোট্ট পরীক্ষা নেই আপনার, দেখি আপনি কিছু শিখতে পারলেন না। উত্তর মিলিয়ে নিতে পারবেন, এই পোষ্টের নিচে দেওয়া আছে। সাবধান, উত্তর কিন্তু চুরি করবেন না!

ধাঁধা ১:
1 EUR/GPB = 0.8708 , এর অর্থ কি? চাইলে উপর থেকে সাহায্য নিতে পারবেন, আর নিচ থেকে উত্তর মিলিয়ে নিতে পারবেন।

একটা প্রশ্ন এখনও রয়েই গেল, আপনি প্রতিবার দশমিকের পরে এতগুলো সংখ্যা নিচ্ছেন কেন? যেমন, 1 EUR/USD = 1.4434 লিখেন কেন? 1.44 লিখলেই তো হয়। শেয়ার মার্কেটে তো এই দশমিকের ভেজাল নাই, সব শেয়ারের মূল্য হয় ২০ টাকা, নয় ৬০ টাকা নতুবা হয়ত ১২০০ টাকা। কোনদিন তো শেয়ারের দাম ২০.২৫৪৩ তা শুনি নাই। এত ভেজাল কেন?

প্রথমত ফরেক্স মার্কেটে কোন কারেন্সি পেয়ার হচ্ছে দুইটা কারেন্সির অনুপাত। যেমন, EUR/USD এর মানে হচ্ছে ১ ইউরো দিয়ে কত ডলার পাব। শেয়ার মার্কেটে তো আর আমরা ১ টা জনতা ব্যাঙ্কের শেয়ার দিয়ে মেঘনা সিমেন্টের কয়টা শেয়ার পাবো তা এর হিসাব করি না। আর তাই, আমাদের দেশের শেয়ার মার্কেটে অধিকাংশ শেয়ারের দাম পুরন সংখ্যায়, তবে কিছু শেয়ারের দাম দশমিকে।

এর ফরেক্স মার্কেটে দশমিকের পর ৪ তা ঘর পর্যন্ত নেয়া হয়েছে কারন ফরেক্স মার্কেটে সাধারনত মুভমেন্ট দশমিকের পরে ৩ আর ৪ নাম্বার ঘরেই বেশি হয়। তাই এটাকে স্ট্যান্ডার্ড ধরা হয়েছেঃ

চলুন দেখে নেই এক নজরে ৬ জুন থেকে ১০ জুন, ২০১১ , এই ৫ দিন এ EUR/USD এর মূল্য:

EUR/USD

তারিখ - দিনের সর্বোচ্চ - দিনের সর্বনিম্ন

৬ জুন, ২০১১ - ১.৪৫৫৮ - ১.৪৬৫৮
৭ জুন, ২০১১ - ১.৪৫৬৪ - ১.৪৬৯৬
৮ জুন, ২০১১ - ১.৪৫৬৫ - ১.৪৬৯৫
৯ জুন, ২০১১ - ১.৪৪৭৮ - ১.৪৬৫৩
১০জুন, ২০১১ - ১.৪৩২৩ - ১.৪৫৫১

দেখতেই পাচ্ছেন যে মার্কেট যা মুভ করছে তা মূলত দশমিকের পরে ২য়, ৩য় ও ৪র্থ ঘরে হচ্ছে। 

[
ধাঁধা ১ উত্তর: 1 EUR/GPB = 0.8708 . এর মানে হচ্ছে ১ ইউরো দিয়ে আপনি ­ 0.8708 পাউন্ড পাবেন]

কি ট্রেড করা হয়?

সহজ উত্তর কারেন্সি। কারণ আমরা বাস্তবে কিছু কিনছি না। তাই এই ধরনের ট্রেডিং কিছুটা বিভ্রান্তিকর মনে হতে পারে।
আমরা যখন একটি কারেন্সি কিনি তখন আমরা একটি দেশের কিছু শেয়ার কিনছি , একটি প্রতিস্থানের শেয়ার কেনার মত। কারেন্সির দাম হল ওই দেশের বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক অবস্থার প্রতিচ্ছবি।
যখন আমরা জাপানিজ ইয়েন কিনি (buy), আমরা মুলত জাপানি অর্থনীতিতে একটি শেয়ার কিনি। আমরা মনে করি জাপানি অর্থনীতির উন্নতি হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও আরও উন্নতি হবে। যখন আমরা ওই শেয়ারগুলো বিক্রি (sell) করে দেব, আশা করি আমরা লাভ করব।
সাধারণে, একটি কারেন্সির সাথে অন্য কারেন্সির আদান প্রদান হার সেই দেশটির অর্থব্যবস্থার তুলনায় অন্য দেশের অর্থব্যবস্থার প্রতিফলন।

Major Currencies


কারেন্সি চিহ্নের তিনটি অক্ষর থাকে, যেখানে প্রথম দুইটি দেশের নাম নির্দেশ করে এবং তৃতীয়টি সেই
দেশটির কারেন্সির নাম নির্দেশ করে।
যেমন NZD এর ক্ষেত্রে, NZ দিয়ে New Zealand বোঝানো হয়েছে, এবং D দিয়ে
Dollar বোঝানো হয়েছে। সহজ, তাইনা?
উপরের কারেন্সিগুলো প্রধান কারন সেগুলোই সবচেয়ে বেশি ট্রেড করা হয়।
Buck হল USD'র ডাক নাম।
USD-কে greenbacks, bones, benjis, benjamins,
cheddar, paper, loot, scrilla, cheese, bread, moolah, 
dead presidents, coco and cash money নামেও ডাকা হয়।

ফরেক্স কি?

ফরেক্স অথবা স্পট ফরেক্স হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রার ক্রয়-বিক্রয়। ফরেক্স মার্কেট এ আপনি একটি দেশের কারেন্সি বিক্রয় করে আর একটি দেশের কারেন্সি ক্রয় করতে পারবেন।
উদহারণসরুপ, আমেরিকা বা USA এর কারেন্সি হছে ডলার, ব্রিটেন বা UK এর কারেন্সি হচ্ছে পাউন্ড। ফরেক্স মার্কেট এ আপনি ডলার বিক্রয় করে পাউন্ড অথবা পাউন্ড বিক্রয় করে ডলার কিনতে পারেন। ডলার অথবা পাউন্ড ব্যাতিতও আর বিভিন্ন দেশের কারেন্সি আছে যা ফরেক্স মার্কেট এ আপনি ক্রয়-বিক্রয় করতে পারেন।

কিভাবে ফরেক্স মার্কেট থেকে আয় করা সম্ভব?

বিভিন্ন দেশের মুদ্রা সর্বদায় পরিবরতনশিল। আপনি পত্রিকায় দেখে থাকবেন যে কখনও কখনও ডলার টাকার বিপরীতে শক্তিশালী হচ্ছে, আবার কখনও টাকা ডলার এর বিপরীতে শক্তিশালী হচ্চে। এরকম পৃথিবীর অধিকাংশ মুদ্রার বিপরিতেই হয়। সুতরাং, আপনার যদি ডলার কেনা থাকে, ডলারের বিপরীতে ইউরো এর দাম পরে গেলে আপনি ডলার বিক্রয় করে ইউরো কিনে রাখতে পারেন। আবার, ইউরো ডলার এর বিপরীতে শক্তিশালী হলে, ইউরো বিক্রয় করে অধিক ডলার পেতে পারেন।
হয়ত আপনার কাছে ১০০ ডলার ছিলো যা বিক্রয় করে আপনি ৮০ ইউরো ক্রয় করেছিলেন। পরবর্তীতে ইউরোর দাম বাড়ার পর তা বিক্রয় করে ১২০ ডলার পেলেন। এভাবে আপনি আয় করতে পারেন। শেয়ার মার্কেট এ শুধু শেয়ার এর দাম বাড়লেই (buy) আমরা প্রফিট করতে পারি। কিন্তু ফরেক্স মার্কেট এ, কোন কারেন্সি শক্তিশালী অথবা দুর্বল হক, দুই ক্ষেত্রেই আমাদের প্রফিট করার সুযোগ আছে যেটা ফরেক্স মার্কেটের সবচেয়ে বড় সুবিধা।

ফরেক্স ট্রেড করার সুবিধাঃ


- আগের দিনে শুধুমাত্র বিশাল ধনী অথবা ব্যাংকগুলো ফরেক্স মার্কেটে ট্রেড করার সুযোগ পেত। কিন্তু বর্তমানে সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে বিভিন্ন ফরেক্স ব্রোকারের আবির্ভাব ও প্রতিযোগিতা বৃদ্ধির কারনে যে কেউই পৃথিবীর যে কোনো দেশ থেকে ফরেক্স মার্কেটে ট্রেড করতে পারে।
- মাত্র ১ ডলার দিয়ে ফরেক্স ট্রেড শুরু করা সম্ভভ। তাছারা প্রায় সব ব্রোকারই আপনাকে ফ্রী ডেমো ট্রেড করার সুবিধা দেবে, অর্থাৎ ভার্চুয়াল মানি দিয়ে। তাই প্রথমে আপনি নিখরচায় ডেমো ট্রেড করে নিজেকে প্রস্তুত করে নিতে পারেন এবং ডেমো ট্রেড করে সাফল্য ফেলে ডিপোজিট করে রিয়েল ট্রেড শুরু করতে পারেন।
- ফরেক্স মার্কেট পরিধি অনেক বড় এবং এই মার্কেটকে ম্যানিপুলেট করা সম্ভভ না। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় স্টক মার্কেট হচ্ছে নিউইয়র্ক স্টক মার্কেট এবং ফরেক্স মার্কেটের আকার তার থেকেও ২৫ গুন বেশি। মনে রাখবেন,ডলার বা ইউরো এর মূল্য কোন দেশের মূল্য কোনো দেশের সরকার নির্ধারণ করে দেয় না। বিভিন্ন দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ও আর্থিক ঘটনাবলীর প্রেক্ষিতে বিভিন্ন দেশের মুদ্রার মূল্য নিজে নিজেই পরিবর্তিত হয়। আপনি যে দামে ডলার বা ইউরো কিনবেন, সেই একই দামে পৃথিবীর সব দেশে ডলার বা ইউরো ক্রয়-বিক্রয় হবে।
- ফরেক্স মার্কেট এ ট্রেড করার ক্ষেত্রে বড় ধরনের লিভারেজ বা লোন সুবিধা পাওয়া যায়, আর তাই খুব অল্প মার্কেট মুভমেন্ট থেকেই আপনি ভাল প্রফিট করতে পারবেন।
- স্ক্যালপিং ফরেক্স এ খুব জনপ্রিয় একটি শব্দ। এর মানে হচ্ছে খুব অল্প সময়ের জন্য খোলা ট্রেড। ফরেক্স মার্কেটের খুব অল্প পরিবর্তনেও ভাল লাভ করা সম্ভভ। অনেকেই ১০ বা ১৫ সেকেন্ডের জন্য একটি ট্রেড ওপেন করে এবং প্রফিট পেলে তা নিয়ে ট্রেড থেকে বের হয়ে যায়।
- ফরেক্স মার্কেট সোম থেকে শুক্র, সপ্তাহের ৫ দিনই দিবা-রাত্রি ২৪ ঘণ্টার জন্য খোলা থাকে। আর তাই, আপনি ব্যাবসায়ি হোন বা চাকুরিজীবী, ফরেক্স মার্কেটে আপনি আপনার সুবিধামত ট্রেড করতে পারবেন।
- ফরেক্স ট্রেডিং আপনি বাসায় বসেই করতে পারবেন, বাইরে যাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। আর তাই পরিবারকে প্রচুর পরিমানে সময় দিতে পারবেন।
- ফরেক্স মার্কেটে ট্রেড করার জন্য আপনাকে সব কিছু অনলাইনে করতে হবে আর অ্যাকাউন্ট ওপেনিং থেকে শুরু করে অ্যাকাউন্টে ডিপোজিট বা উইথড্র করাও অনেক সহজ।
- আপনি যদি ভাল ট্রেড করতে পারেন, তাহলে অনেকেই আপনার সাথে ডিপোজিট করতে উৎসাহিত হবে এবং সেক্ষেত্রে আপনি তাদের ট্রেড পরিচালনা করতে পারেন এবং তাদের লাভের একটি অংশ আপনি পাবেন।
- সর্বোপরি একজন সফল ও দক্ষ ফরেক্স ট্রেডার এই মার্কেট থেকে প্রচুর পরিমানে আয় করতে পারবেন।
উল্লেখ করা বাঞ্ছনীয়, একজন দক্ষ ও সফল ট্রেডার হতে হলে আপনাকে ফরেক্স মার্কেট সম্পর্কে প্রচুর পড়াশোনা করতে হবে, নিজেকে এই মার্কেটের যোগ্য করে তুলতে হবে। ফরেক্স মার্কেট থেকে যে কেউই কোন কিছু না জেনেও হয়ত প্রথম দিকে অনেক আয় করতে পারেন। মনে রাখবেন, ফরেক্স মার্কেট স্টক মার্কেটের মতই চ্যালেঞ্জিং। না জেনে হয়ত প্রাথমিকভাবে সফল হওয়া যাবে যেটা স্টক মার্কেটও অনেকেও অনেকে হয়। তবে দীর্ঘসময়ের জন্য টিকে থাকতে হলে, এক্সপার্ট হওয়া ছাড়া কোন বিকল্প নেই।
আর একটি কথা, ফরেক্স মার্কেটে মন্দা বলে কিছু নেই। কারন স্টক মার্কেটে আপনি শুধু buy করতে পারেন, ফরেক্স মার্কেটে buy বা sell উভয়ই করতে পারবেন।
মনে রাখবেন,
When stock market is going down and down, in forex, one currency is always up!


ফরেক্স ট্রেডিং করার জন্য কি কি দরকার?
আপনার ইন্টারনেট কানেকশনসহ একটি পিসি অথবা উইন্ডোজ মোবাইল আছে? তাই যথেষ্ট।


আমি কিভাবে ডলার অথবা অন্যান্য মুদ্রা ক্রয়-বিক্রয় করব?
ফরেক্স ট্রেড করতে হলে সর্বপ্রথম আপনাকে কোনো একটি ফরেক্স ব্রোকারের সাথে অ্যাকাউন্ট ওপেন করতে হবে ও তাতে ডিপোজিট করতে হবে। অ্যাকাউন্ট খুব সহজেই ২ মিনিটে অনলাইনে ওপেন করা যায়। আপনি বিভিন্ন অনলাইন মুদ্রা যেমন পেপাল, অ্যালার্ট পে, লিবার্টি রিজার্ভ ইত্যাদি দিয়ে তাৎক্ষণিক আপনার আকাউন্টে ডিপোজিট করতে পারেন ও ফরেক্স ট্রেড করা শুরু করতে পারেন।
তবে সাধারনত অধিকাংশ মানুষই ব্যাংক এর মাধ্যমে ফরেক্স ব্রোকারদের সাথে ডিপোজিট করে। সেক্ষেত্রে, অ্যাকাউন্ট ওপেনিং এর পরে, আপনি আপনার ব্রোকারের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নাম্বার এবং ব্যাংক ডিপোজিটের বিস্তারিত তথ্য পাবেন।
আপনার অ্যাকাউন্টে ডিপোজিট সম্পন্ন হলে আপনি ট্রেড করা শুরু করতে পারবেন। ফরেক্স ট্রেডিং অনলাইনে সফটওয়ারের মাধ্যমে করতে হয়। এই সফটওয়ার আপনি বিনামূল্যে আপনার ব্রোকারের ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করতে পারবেন। সফটওয়ারটি ইন্সটল করে ব্রোকার প্রদত্ত ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড দিয়ে তাতে সাইন ইন করলেই বিভিন্ন পেয়ারের চার্ট ও মূল্যতালিকা লোড হবে এবং আপনি আপনার ট্রেড ওপেন/ক্লোজ করতে পারবেন।